অন্যান্য 

রাখিবন্ধন ও নারীদের সুরক্ষা একটি পর্যালোচনা/ অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেয়ার করুন

রাখিবন্ধন ও নারীদের সুরক্ষা একটি পর্যালোচনা……….

অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায় 

Advertisement

” সেদিন চৈত্র মাস তোমার চোখে দেখেছিলেম

আমার সর্বনাশ ”

লেখক এর এই কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে যে সর্বনাশের তা অত্যন্ত পরিমাণেই রোমান্টিকতার পরিচয়বাহক, নারী পুরুষ একসাথে থাকবে এক সমাজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেবে এইতো স্বাভাবিক, আর উৎসব মানে তো শুধুমাত্র কোন ব্যক্তিগত মানুষের নয় উৎসব সবার। আমাদের ভারতবর্ষের যে কটি রাজ্য আছে আমরা সকলেই সবার উৎসব অত্যন্ত আনন্দের সাথে পালন করি কিন্তু তার সাথে এড়িয়ে যায় না বা হারিয়ে যায় না আমাদের কর্তব্যবোধ। ও ভাইয়া বা তিলোত্তমার কর্মবোধ ও দায়িত্ববোধ যেমন হারিয়ে যায়নি, কিন্তু সেও তো কারোর বোন, কারোর অতি নিকট্জন, কারুর কন্যা কারুর বা পছন্দের প্রিয় বন্ধু কিন্তু সেই তিলোত্তমাকেই অচিরেই হারিয়ে যেতে হল কলকাতার বুক থেকে ধর্ষিত লাঞ্ছিত অপমানিত হয়ে চলে যেতে হল শুধুমাত্র কর্তব্যে পালন করার তাগিদে, সেও তো রাখি বেঁধেছিল কোন ভাইয়ের হাতে কিন্তু সমাজের সেই নরপিশাচ রা কেড়ে নিল তার সম্ভ্রম তার প্রাণ, আবার এরাই মনোজিৎ এর মত ধর্ষক যারা আবারো রাখি পড়বে

নারীদের হাত থেকে যাদের সম্ভ্রম লাঞ্ছনা লুট করা এদের একমাত্র কর্তব্য, এরা মেয়েদের শুধুমাত্র এক টুকরো মাংসপিণ্ড বলে মনে করে।তাদের কাছে এদের সম্ভ্রম লজ্জার কোন মূল্য নেই,উৎসব তাই তাদের কাছে শুধুমাত্র লাঞ্ছনার একটি মাধ্যম মাত্র যার মাধ্যমে তারা নারীদের লাঞ্ছনা করার আরেকটি নুতন উপায় খুজে নেয়। ১৯০৫ সালে হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির ও সম্প্রীতির ঐক্যের স্বার্থে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুরু করেছিলেন রাখি বন্ধন, পুরাকালে ব্যাখ্যা থাকলেও রাখিবন্ধনকে সামাজিক স্বীকৃতি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই, কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে উৎসবের সাথে সাথে উৎসবের তাৎপর্য প্রকৃতি ও প্রাসঙ্গিকতা আমরা ভুলতে বসেছি, আমরা মান ও হুঁশের অধিকারী,তাই আমরা মানুষ তাই মনে রাখতে হবে মানুষ হিসেবে অপর মানুষের সংগ্রাম রক্ষায় আমাদের অন্যতম কর্তব্য যেখানে বারবার আক্রান্ত হচ্ছে বাংলার সংস্কৃতি,বাংলা ভাষা বাংলার প্রকৃতি সেখানে দাঁড়িয়ে এই অভয়া এবং আর কোন ধর্ষণে যে কাম্য নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না, অভয়ার মৃত্যুর এক বছর অতিক্রান্ত মানুষের মন থেকে হয়তো স্মৃতিও কিছুটা মলিন হয়ে গেছে, কিন্তু মনে রাখতে হবে এখনো শাস্তি পাই নাই প্রকৃত অপরাধীরা এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা প্রকৃত শাস্তি পাচ্ছে উৎসবের আস্ফালন ও উৎসবের উজ্জ্বল্য ম্লান হয়ে যাবে, এ বলার অপেক্ষা রাখে না, তাই উৎসব আসুক আপন গরিবা নিয়ে আপন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আপন প্রকৃতি নিয়ে আপন আনন্দের পরিবেশ নিয়ে এবং আজকের এই দিনে একটাই প্রার্থনা বিচার পাক অভয়া শান্তি কঠোর থেকে কঠোরতারও শাস্তি পাক তাকে পৃথিবীর আলো দেখতে দেয়নি যারা সেই সমস্ত দুরাচারিরা।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ